শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
এক দফা দাবিতে নার্সদের পতাকা মিছিল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে নেপালের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী স্থাপন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখেছে বিজিবি সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার ফুলেল শুভেচ্ছা বাড়ছে পদ্মার পানি, বন্যার আতঙ্ক রাজশাহীতে টেক্সটাইল করপোরেশন পরিদর্শন করলেন বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা দূষণ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে বিশ্বব্যাংক : পরিবেশ উপদেষ্টা “যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার ঝটিকা সফর” স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াতের

রাশিয়া থেকে তেল কিনলে কী সুবিধা পাচ্ছে ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

ইউক্রেন আক্রমণের জেরে রাশিয়া থেকে তেল, গ্যাস, কয়লা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন চেয়েছিল, তাদের মতো বাকিরাও রুশ জ্বালানি বর্জন করুক। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি হয়নি। বরং তেল-গ্যাসের দামে বড় ছাড় দিয়ে উল্টো যুক্তরাষ্ট্রকেই চাপে ফেলে দিয়েছে রাশিয়া। ইউরোপীয় দেশগুলো এখনো রুশ জ্বালানি নেওয়া অব্যাহত রেখেছে। আর সস্তায় পেয়ে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়াতে চলেছে ভারত।

এ অবস্থায় অনেকেরই জানার ইচ্ছা, তেল কেনার ক্ষেত্রে রাশিয়া কী ধরনের সুবিধা দিচ্ছে, যার জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতেও তোয়াক্কা করলো না নয়াদিল্লি? কম দামে কত তেল কিনছে তারা? আর সেই কম দামটাই বা কত?

বার্তা সংস্থা পিটিআই’র বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি গত বুধবার (১৬ মার্চ) জানিয়েছিল, রাশিয়া থেকে ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনেছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল। তার দাম পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে অনেক কম।

সূত্রের খবর অনুসারে, ইন্ডিয়ান অয়েল রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরালস ক্রুড কিনেছে, যার ডেলিভারির তারিখ আগামী মে মাসে। আর এর দাম পড়েছে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের বাজারমূল্যের তুলনায় ২০ থেকে ২৫ মার্কিন ডলার কম। গত বুধবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্টের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের কাছাকাছি। সেই হিসাবে, ভারত রাশিয়া থেকে ৭৫-৮০ ডলারে তেল পাচ্ছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর এটাই প্রথম রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনলো ভারত। দেশটি তার চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশ তেলই আমদানি করে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে রাশিয়ার ভাগ ছিল এতদিন মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু এখন বড় মূল্যছাড় পেয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।

পিটিআই’র খবর অনুসারে, একটি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনেছে ভারত। যদিও সেই পক্ষের নাম উল্লেখ করেনি তারা।

তবে এই খবরের একদিন পরেই গত ১৭ মার্চ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম রাশিয়া থেকে ২০ লাখ ব্যারেল ইউরালস ক্রুড কিনেছে। তাদের কাছে তেলের এই কার্গো বিক্রি করেছে ডাচ কোম্পানি ভিটল। এই তেলও আগামী মে মাসে হাতে পাবে নয়াদিল্লি।

ইন্ডিয়ান অয়েল জানিয়েছে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে জাহাজের ব্যবস্থা করা ও বিমার জটিলতা এড়াতে বিক্রেতাকেই সব কার্গো ভারতীয় উপকূলে পৌঁছে দিতে হবে, এমন শর্তে তেল কিনেছে তারা।

যদিও বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি জানিয়েছে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনলে তাতে আপত্তি নেই তাদের। এতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন হবে না বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি।

এর আগে বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচির কারণে ইরানের জ্বালানি রপ্তানিতে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, সেই তুলনায় রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা অনেকটাই হালকা। নিষেধাজ্ঞার পর ইরানি তেল-গ্যাসের ক্রেতা ও এর বিনিয়োগকারীদের ওপরেও চড়াও হয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু রাশিয়ার ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে না। জার্মানিসহ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ এখনো রুশ তেল-গ্যাস কিনছে।

মূলত রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা একাই বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অন্যদের জন্য আইনগত কোনো বাধা এখন পর্যন্ত নেই। ফলে অর্থনীতিতে করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা এবং জ্বালানির সাম্প্রতিক উচ্চমূল্যের কারণে অনেক দেশই ডিসকাউন্ট মূল্যে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল-গ্যাস কিনতে ঝুঁকছে।

২০১৯ সালের হিসাবে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে সৌদি আরব। ওই বছর তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৪৫ বিলিয়ন ডলারের। ১২৩ বিলিয়ন ডলারের তেল রপ্তানি করে রাশিয়ার অবস্থান তালিকায় দ্বিতীয়।

রাশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে চীন। ২০১৯ সালে রাশিয়ার মোট রপ্তানির ২৭ শতাংশ তেল কিনেছিল চীন, যার মূল্য ছিল ৩৪ বিলিয়ন ডলার। যদিও এটি চীনের মোট তেল আমদানির মাত্র ১৬ শতাংশ।

একই বছর বিশ্বের ৪৮টি দেশ রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনেছিল। বেলারুশ, কিউবা, কুরাকাও, কাজাখস্তান, লাটভিয়া ও স্লোভাকিয়া রাশিয়ার তেলের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। এই দেশগুলো চাহিদার ৯৯ শতাংশের বেশি তেল আমদানি করে রাশিয়া থেকে।

ভারত ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, এই মুহূর্তে রুশ তেল আমদানিতে সবচেয়ে বড় বাধা নিরাপদ ট্রানজেকশন। তবে রুশ তেলের জন্য রাশিয়ার বাইরের কোনো সত্ত্বার কাছে (ভিনদেশি ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান) অর্থ পাঠানো অতটা সমস্যার হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com