বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিমের সম্পদের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঈন আহমেদ নামে এক ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে দুদক এই সিদ্ধান্ত নেয়।
২ অক্টোবর দুদকের স্মারক নং- ০০.০১.০০০০.৫০৩,২৬,৪৭৯.২৪-৩৫৯৫৭ ইস্যু করা চিঠিতে বলা হয়েছে মঈন আহমেদ, গ্রাম গুথুমা, উপজেলা পশুরাম, জেলা ফেনী কর্তৃক আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, সাবেক সংসদ সদস্য, ফেনী-১ এর বিরুদ্ধে দাখিলকৃত অভিযোগটি অনুসন্ধান করার নিমিত্ত মহাপরিচালক (তদন্ত-২) বরাবর প্রেরণের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
অভিযোগপত্রে ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্য, দলীয় পদ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতপূর্বক হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়।
দুদকের ইস্যু করা চিঠিটি সাবেক উপসচিব ও সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ফেনীর পশুরাম উপজেলার গুথুমা গ্রামে মঈন আহমেদ নামে কোনো ব্যক্তি নেই। তাছাড়া তিনি উল্লেখিত অভিযোগের কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত নয়।
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, সরকার পতনের পর একটি চক্র তার সম্মানহানীর জন্য দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করেছে। অভিযোগকারীর কোনো সঠিক পরিচয় নেই। এখানেও মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে এই সাবেক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে মানুষের কল্যাণে সারাজীবন কাজ এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে থেকেছেন সামনের কাতারে।
তিনি জানান, ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৮৪-৮৬) ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ছাত্রজীবন শেষ করে বিসিএস পাস করে সিভিল প্রশাসনে যোগদান করেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এরপর ২০০১ সাল থেকে বিরোধী দলীয় নেতার এপিএস হিসেবে যোগদান করেন। ১/১১ সরকার দুর্নীতিবাজের তালিকায় তার নামও প্রকাশ করলে নৈতিক কারণে ২০০৮ সালে সরকারের উপসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
চাকরি থেকে পদত্যাগের পর ব্যবসায়ী হিসেবে তার নতুন কর্মজীবন শুরু করেন এবং গত ১৬ বছর নিয়মিত কর প্রদান এবং নিয়মিত সব হিসাব-নিকাশ দাখিল করেছেন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তার অর্জিত সম্পদ প্রদর্শন করেন।
যা হলফনামায়ও দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও ২০২৪ সালের আগে আলাউদ্দিন নাসিম গত ১৬ বছর সরকার বা দলের কোনো পর্যায়ের কোনো অবস্থানে ছিলেন না, যা থেকে অনিয়ম বা দুর্নীতি করার সুযোগ আছে। চাকরি থেকে পদত্যাগের পর তিনি অনেকটা নিভৃত জীবনযাপন করেছেন এবং নিজের কাজ করেছেন।
রাজনৈতিক ও চাকরি জীবনে কখনও দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করেননি। কখনও কারো কাছ থেকে কোনো অনৈতিক সুবিধা নেননি। তিনি কখনও কারো জায়গা জমি দখল করেননি। দেশের বাইরে কোথাও তার বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই। তার পরিচয় তিনি বাঙালি এবং বাংলাদেশই তার শেষ ঠিকানা।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে ন্যায় বিচার আশা করেছেন সৎ, আদর্শ ও নীতিবান রাজনীতিবিদ আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।