বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা – ২১ শে সেপ্টম্বর সকাল থেকেই মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার চৌগাছা গ্রামে চলছে বেশ আড়ম্বরপূর্ণ বিয়ের আয়োজন ।বিয়ের বহর গেটের কাছে আসতেই এক ভীন্নধরণের উত্তেজনা। বাড়ির গেটের সামনে মাইক্রোবাস থেকে নামলেন লাল বেনারসি শাড়ি পরা বধূবেশে এক কনে ।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য উঠোনের বাড়ির সামনে দৃষ্টিনন্দন বিয়ের গেট, এক পাশে চলছে রান্না । দুই পাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো অসংখ্য মানুষ। সবই ঠিকঠাক বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য।
সে এক অন্যরকম আবহ । প্রচলিত প্রথা ভেঙে বিয়ের এমন ঘটনাই ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার একটি গ্রামে।
বর গাংনী উপজেলার চৌগাছার কমরেড আব্দুল মাবুদের ছেলে তরিকুল ইসলাম জয় একজন ব্যবসায়ী।শনিবার সকাল থেকেই কমরেড আব্দুল মাবুদের বাড়ির আশেপাশে ছিল বিপুল সংখ্যক উৎসুক মানুষ ও আত্মীয়স্বজনের ভিড়। কনে চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আক্তার খুশি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে স্নাতকের শিক্ষার্থী। উৎসুক দৃষ্টিতে সবাই তাকিয়ে ছিলেন কখন আসবে কনে ও কনেযাত্রীরা। দুপুরে ৭টি মাইক্রোবাস ও ৩০টি মোটরসাইকেল বহর এবং ৬৭ জন বরযাত্রী নিয়ে কনে এসে নামলেন বরের বাড়ির গেটের সামনে। এ সময় কনেকে ফুল ও মিষ্টি মুখ করিয়ে বরণ করে নেয় বর পক্ষ। ভিন্নধর্মী এ বিয়ের আয়োজন ঘিরে এলাকার মানুষেরও উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি ছিলো না।
অতঃপর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। বিয়ে হয় ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী একজন মাওলানা তাদের দু’জনকে কবুল পড়ান। প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করান স্থানীয় কাজি। এরপরে বর পক্ষের দাওয়াতী আত্মীয় স্বজন ও কনে যাত্রীদের ভুড়িভোজ করানো হয়।
সাজ বেলায় বর তরিকুল ইসলাম জয়কে নিয়ে কনে খাদিজা আক্তার খুশি চলে গেছেন তার বাবার বাড়িতে। সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পর কনেকে সাথে নিয়ে বর ফিরে আসবেন নিজের বাড়িতে।
নিজের বিয়ের এমন আয়োজন সম্পর্কে কনে খাদিজা আক্তার খুশি বলেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকার হিসেবে একজন মেয়ে একজন ছেলেকে বিয়ে করতে তার বাড়িতে যেতে পারেন, তা কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। সেই বাধার বৃত্ত ভেঙে আমরা শুরু করেছি। আশা করছি আরো অনেকেই এখন এটি করবেন।
বিয়ের আয়োজন প্রসঙ্গে কণের পরিবারের উল্লেখযোগ্য মন্তব্য না পাওয়া গেলেও বরের বাবা কমরেড আব্দুল মাবুদ বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার আছে। বাংলাদেশে ওয়ার্কার্স পার্টির অনেক নেতা কর্মী বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনিও অভিভূত।
উপস্থিত অনেকেই নারীর প্রথা ভাংগবার এই বিপরীত অভিনব আয়োজনে বিনোদিত হয়েছেন বলে জানান ।