রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
নাজির পুরে ধান ক্ষেতের সীমানা নিয়ে কথা কাটাকাটিতে মারামারি ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে অপপ্রচারের অভিযোগে থানায় জিডি ‘ন্যায়বিচার ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় দর্শনের শিক্ষা জরুরি’ সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আরেক ‘শাপলা চত্বরের’ হুমকি হেফাজত নেতার

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

আমাদের কাছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সম্মান অনেক বেশি। যদি তাদের সম্মান রক্ষা করতে না পারেন তাহলে আপনাদের গদিতে আগুন দেয়া হবে। দোষীদের শাস্তি না হলে আমরা আবারও শাপলা চত্বরে যাব।

ভোলার বোরহানউদ্দীনের ঘটনায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ সমাবেশে সরকারের উদ্দেশ্যে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক এ হুমকি দেন।

সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর আমির আল্লামা নূর হোসেন কাসেমী বলেন, আল্লাহর নবীর সাথে যারা বেয়াদবি করেছে, তাদের জনতা কখনও মেনে নেবে না। যারা আল্লাহর নবীর মান ইজ্জত রক্ষা করতে পারে না তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।

তিনি বলেন, একটি আইন করতে হবে যে আইনে আল্লাহ তায়ালা ও নবী-রাসূলগণের কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হবে। এই আইন না হওয়া পর্যন্ত হেফাজতের আন্দোলন চলবে। বাংলাদেশ শান্তির দেশ। হেফাজতে ইসলাম শান্তিতে বিশ্বাসী, সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। আমরা দেশের শান্তি রক্ষা করতে চাই। তাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো কিন্তু কোনোভাবেই আল্লাহর হাবিবের সাথে করা বেয়াদবি মেনে নেয়া হবে না। সরকার আল্লাহর হাবিবের সম্মান রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। তাই তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।

আল্লামা নূর হোসেন কাসেমী বলেন, যদি দোষীদের শাস্তি না হয় তাহলে আমরা বসে থাকব না, আঙুল চুষব না।

এ সময় সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন কাসেমী। সেগুলো হলো- ভোলায় পুলিশের মামলা প্রত্যাহার, গ্রেফতারদের অবিলম্বে মুক্তি, সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও ভোলার এসপিকে প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশ থেকে ইস্কনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

ঈসা শাহেদী নামে হেফাজতে ইসলামের ঢাকার এক নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, হিন্দুধর্মের যে ছেলেটির পোস্ট দিয়েছে তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল। আমরা বলতে চাই প্রধানমন্ত্রী আপনি অবিলম্বে আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করুন তা না হলে আমরা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব পালনে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

হেফাজতের নেতা জাফরুল্লাহ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, যতই ভালো কাজ করেন আল্লাহর নবী-রাসূলের সম্মান রক্ষা না করতে পারলে আপনার পতন অনিবার্য। এছাড়া আইডি হ্যাকের বিষয়ে আপনি যে বক্তব্য দিয়েছেন এ জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান।

হেফাজতের ঢাকা মহানগর নেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, নবীপ্রেমিকদের ওপর অত্যাচারে প্রথম নয়। যারা আমার এই ভাইদের মেরেছে তাদের বিচার যদি না হয় তাহলে আরেকটি শাপলা চত্বরের মতো ঘটনা ঘটবে।

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে মহানবীকে (সা.) কটূক্তির অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ঈদগাহ মসজিদ চত্বরে তৌহিদী জনতার ব্যানারে গত রোববার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ডাকা হয়। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে সকাল ১০টার মধ্যেই সংক্ষিপ্ত মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করা হলে পরে আসা লোকজন মোনাজাত পরিচালনাকারী দুই ইমামের ওপর চড়াও হয়। এতে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসী। এ সময় পুলিশ গুলি ছুড়লে চারজন নিহত হন।

এ ঘটনায় ভোলার অজ্ঞাতনামা পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। গত রোববার দিবাগত রাতে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবিদ হোসেন এ মামলা করেন।

বোরহানউদ্দিনের ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মানুষকে সমবেত করার পেছনে উদ্দেশ্য কী?

তিনি বলেন, বোরহানউদ্দিনে একটি হিন্দু ছেলের ফেসবুকের আইডি হ্যাক করে তার নামে কতগুলো মিথ্যাচার করা হয়েছে, যার ফেসবুক হ্যাক করা হয়েছে তার কাছে আবার ফোন করে ২০ হাজার টাকাও চাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ সৃষ্টির পর কথিত নাস্তিকদের শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবিতে হঠাৎ জেগে ওঠে কওমি মাদরাসাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশ-বিদেশে আলোচনায় আসে সংগঠনটি।

ওই বছরের ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে পুরো ঢাকা অচল করে দেয় হেফাজতে ইসলাম। রাজধানীর মতিঝিল ও এর আশাপাশ এলাকায় চলে ধ্বংসলীলা। তবে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের কৌশলী ভূমিকা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহসী অভিযানে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হন হেফাজতের নেতাকর্মীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com