বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
‘ন্যায়বিচার ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় দর্শনের শিক্ষা জরুরি’ সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক

বিশটি মাল্টা চারাই সাখাওয়াতের জীবনে আসলো সফলতা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি॥

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন মাল্ট চাষ করে তাক দিয়েছে দেশের মানুষকে। অজোপাড়াগায়ের একজন সাদামাটা মানুষ। তিনি মালটা চাষে দেশ সেরা ক্ষ্যাতি অর্জন করে এখন স্যেশাল মিডিয়া পরিচতি এক মানুষ হয়ে উঠেছেন। এলাকায় অনেকে তাকে গাছ পাগল সাখাওয়াত বলেও ডাকে। সরকারী চাকুরিজীবি হলেও নিজের ইচ্ছা শক্তি দিয়ে গ্রামে গড়ে তুলেছেন ৪০ বিঘা জমি উপরে মালটার বাগান। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে সাখাওয়াতের মালটার বাগানটি এখন দেশের সব থেকে বৃহৎ মালটার বাগান।

গ্রামের শিক্ষক আব্দুর রহমানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন বাবুল। শুরুতে কোন কিছুই সহজ ছিল না মালটা চাষী সাখাওয়াতের কাছে। এমনকি মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোন মাঠ কর্মির সহযোগীতাও পায়নি সে। ছোটবেলা থেকে সাখাওয়াতের বুকে গাছের প্রতি ভালবাসার জন্ম। সেই সুবাদে ২০১৩ সালে খুলনা কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট থেকে ২০টি মালটার চারা কেনেন।অল্প পুজি দিয়ে গাছ লাগানোর এক বছরের মাথায় গাছগুলো কলম করে চারা গাছ তৈরি করেন সাখাওয়াত। এরপর গ্রামের কৃষকের কাছ থেকে ২৪ বিঘা জমি লিজ নিয়ে প্রায় চার হাজার কলম মালটার চারা গাছ রোপণ করেন। বর্তমানে একই দাগে ৪০ বিঘা মালটা আছে কৃষক সাখাওয়াতের। গাছ লাগানোর দুই বছর পর ফুল আসতে শুরু করে মালটার চারাগুলোতে। বর্তমানে সাখাওয়াতের মালটার বাগানে ডালে ডালে মালটা ফলে ভরা।

মালটা চাষী সাখাওয়াত জানান, মালটা বাগান করতে ৫ বছরে এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ২৯ লাখ টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে বছরে ৬০-৭০ মণ মালটা ফল পাওয়া যাবে। যা বাজারে বিক্রি হবে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকায়। এছাড়া সমস্ত মালটার বাগানে মালটা বিক্রি হবে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার মতো। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে মালটার ফলন ভাল হয়। প্রতি কেজি মালটা ৮০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বর্তমান বাজারে। উচু জমিতে মালটার চারা রোপণ করতে হয়। বাগানে রাসায়নিক সারের চেয়ে জৈব সার বেশি ব্যবহার করা হয়। প্রথমে গ্রামে যখন মালটার বাগান করি তখন প্রতিবেশীরা বলতেন সাখাওয়াত গাছপাগল। তারা টিটকারি করে বলতো টাকা বেশী হয়েছে তাই কাঁচা পয়সা পানিতে ফেলছে। আজ সেসব প্রতিবেশীরাই আমাকে উৎসাহ দেয় বেশী।

মালটা বাগান করে সাখাওয়াত একাই যে লাভবান হয়েছে এমনটা না। তারা বাগানে কাজ করে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন ১২ জন মালটা বাগান শ্রমিক।

গ্রামের চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, সাখাওয়াতের ৪০ বিঘা জমিতে উপর চার হাজার মাল্টার চারা রয়েছে। প্রতিটি গাছে মাল্টা ঝুলে মাটিতে নুয়ে পড়ে আছে। তার এই সাফল্য দেখে গ্রামের অন্য বেকার যুবকরাও মালটার বাগান তৈরি করছে।

সাখাওয়াতের প্রতিবেশী আকতার হোসেন জানান প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাখাওয়াতের মালটার বাগান দেখতে আছে বিভিন্ন ফল ব্যবসায়ীরা। এদের ভিতর বেশীর ভাগই সাখাওয়াতের কাছে থেকে মালটার চারা কিনে নিয়ে যান। অনেকে আবার মালটা বাগান তৈরীর পরামর্শ নিতে আসেন। সবকিছু মিলে ছোট্ট গ্রামের সাখাওয়াত এখন বাংলাদেশের মালটা বাগানের আইডল সকলের কাছে।

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাখাওয়াতের মাল্টার বাগান দেখতে এসেছেন বাগান চাষীরা। কৃষি বিভাগ থেকে মাল্টা চাষী সাখাওয়াতকে সব রকম সহযোগীতা করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ ফলের চাষ আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এ চাষ বেশ লাভজনক। সর্বোপরি দেশে মাল্টা চাষ সম্প্রসারিত হলে বিদেশি আমদানি নির্ভরতা যেমন কমবে, তেমনই ফরমালিনমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত মাল্টা প্রাপ্তিও নিশ্চিত হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com