বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
সারাদেশ ডেস্ক ॥
তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতোমধ্যে মার্কিন সংসদের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে তাকে অভিশংসনের প্রস্তাব পাস হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অভিশংসন প্রস্তাব আগামী মাসে সিনেটে উত্থাপন করা হবে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দু’টি অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ভোটাভুটি হয়। প্রথম অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। দ্বিতীয় অভিযোগ, কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন তিনি।
দু’টি অভিযোগের ক্ষেত্রেই অভিশংসনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পড়েছে। প্রথম অভিযোগে অভিশংসনের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৩০টি এবং বিপক্ষে পড়েছে ১৯৭টি। দ্বিতীয় অভিযোগের ক্ষেত্রে পক্ষে পড়েছে ২২৯টি ভোট এবং বিপক্ষে ১৯৮টি ভোট।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো প্রেসিডেন্টকে অভিসংশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়নি। ১৮৬৮ সালে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসিত হন অ্যান্ড্রু জনসন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই তৎকালীন সেক্রেটারি অব ওয়ার এডউয়িন স্ট্যানটনকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। অভিশংসনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাকে অপসারণ করতে সিনেটের দুই তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন ছিল। সিনেটে ডেমোক্র্যাট এ নেতার অভিশংসনের পক্ষে পড়েছিল ৩৬টি ভোট, বিপক্ষে ১৯টি। অভিশংসনের পক্ষে মাত্র একটি ভোট কম পড়ায় প্রেসিডেন্ট পদে বহাল থাকেন তিনি।
১৯৯৮ সালে দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসিত হন বিল ক্লিনটন। ডেমোক্র্যাট এ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন এবং হোয়াইট হাউস ইন্টার্ন মনিকা লিউনেস্কির সঙ্গে সম্পর্ক জড়ানোর বিষয়টি গোপন করে কংগ্রেসের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন। সিনেটে দুই তৃতীয়াংশের কম ভোট পড়ায় প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরতে হয়নি ক্লিনটনকে।
এছাড়া, ১৯৭৪ সালে ‘ওয়াটারগেট স্ক্যান্ডাল’ এর কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিক নেতা রিচার্ড নিক্সনের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ওই বছরই পদত্যাগ করেন নিক্সন, তাই তার অভিশংসন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
বুধবার বিকেলে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসনের পক্ষে ভোটাভুটির সময় নির্বাচনী প্রচারণার কাজে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য মিশিগানে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, কোনো অপরাধ না করার পরও তারা আমাকে অভিশংসিত করছে, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম।
জানুয়ারিতে ট্রাম্পকে অভিশংসনের শুনানি শুরু হবে সিনেটে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে, রিপাবলিক নিয়ন্ত্রিত সিনেটে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব হবে না তাকে। এখন দেখার বিষয়, কী ঘটতে যাচ্ছে ট্রাম্পের ভাগ্যে।