বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
‘ন্যায়বিচার ও নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় দর্শনের শিক্ষা জরুরি’ সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক

শেয়ারবাজারের পতনে ‘জড়িত’ ডিএসই

সারাদেশ ডেস্ক ॥

শেয়ারবাজারে সম্প্রতি দরপতনের পেছনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের এক অংশ জড়িত বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

এ কারণে ডিএসই পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে বিএসইসি। একই সঙ্গে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে শুনানিতে অংশ নিতে ডেকেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বিএসইসির সহকারী পরিচালক মো. রফিকুন্নবি সই করা এক চিঠিতে এই কারণ দর্শানো এবং শুনানিতে ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইর জরুরি একটি সভাও করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শেয়ারবাজারের অস্বাভাবিক পতনের কারণ অনুসন্ধানে বিএসইসি ২০১৯ সালের ২১ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি শেয়ারবাজারের পতনের সঙ্গে ডিএসইর সম্পৃক্ততা পায়।

এরমধ্যে রয়েছে- ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের কিছু সদস্য মূল্য সংবেদশীল কিছু তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করে। এমনকি বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এসব মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশ করা হয়। যা শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলেছে। তাদের ওইসব মন্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পরে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ ওই সব তথ্য প্রকাশ নির্ভর করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি জানায়, ডিএসইর সিআরও নেতৃত্বে থাকা রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিভাগটি শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেনি। তারা আইন-কানুন, কমপ্লায়েন্স সম্পর্কে সেমিনার, গণমাধ্যম এমনকি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখেনি।

বিএসইসি তদন্তে পেয়েছে, এসিআইয়ের গত কয়েক বছরের আর্থিক বিবরণী নিয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ডিএসই ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়াকে প্রধান করে ওই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন- ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমান, পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, স্বতন্ত্র পরিচালক মনোয়ারা হাকিম আলী, প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমান এবং ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আবদুল মতিন পাটোয়ারী।

এই কমিটির জানানো তথ্যে এসিআইয়ের সাবসিডিয়ারি অনেক লোকসানে এবং মূল কোম্পানির মুনাফা খেয়ে ফেলছে বলে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। যা ডিএসইর আইনগত সক্ষমতার মধ্যে ছিল না।

বিএসইসি বলছে, এসিআই লিমিটেড ইস্যুতে ডিএসই সঠিক দায়িত্ব পালন করেনি। তাদের খামখেয়ালিপনায় কোম্পানিটির শেয়ার দরপতন হয়। যা মূল্য সূচকের পতনে ভূমিকা রাখে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এসিআই নিয়ে ডিএসইর গঠিত কমিটির কিছু সদস্য মিডিয়ায় দেয়া বক্তব্যে জানায়- এসিআই কৃত্রিম আর্থিক হিসাব প্রকাশ করে। এ ছাড়া ডিএসইকে দেয়া এসিআইয়ের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না। ফলে পুনরায় তদন্তের জন্য রিপোর্ট কমিশনে পাঠানো হবে। যা ২০১৯ সালের ২৯ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। যা ছিল অনুমান নির্ভর এবং সিকিউরিটিজ আইনের ব্যত্যয়। কিন্তু ডিএসইর ওই তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে জনসম্মুখে কথা বলতে পারে না।

বিএসইসি তদন্তে আরও পেয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জুন ১৯ পর্যন্ত সময়ে এসিআইর শেয়ারের দাম কমে ৩৩ শতাংশ। ওই সময় ডিএসইর তদন্ত কমিটি গঠন এবং কাজ করেছিল। যা এসিআইয়ের শেয়ারের দরপতনের সঙ্গে সম্পৃক্ততাকে ইঙ্গিত করে। ওই কমিটি এসিআই সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করার ফলেই কোম্পানিটির শেয়ার দামে ব্যাপক পতন হয়। মূল্য সূচকে বড় নেতিবাচক ভূমিকা রাখে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, একটি তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে নিয়ে ডিএসই এ জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারে না। বরং স্টক এক্সচেঞ্জ লিস্টিং রেগুলেশন-২০১৫ এর ৫৪ (১) অুনযায়ী, কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে পরিদর্শন করতে পারে। কিন্তু ডিএসই এসিআইয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের অনুমোদন নেয়নি। ফলে স্পষ্টভাবেই রেগুলেশন ৫৪-(১) ব্যত্যয় ঘটেছে। ডিএসইর তদন্ত কমিটি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি আরও জানিয়েছে, অনিয়মের মাধ্যমে ডিএসই কর্তৃপক্ষ বোর্ড অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেগুলেশন-২০১৩ এর ৯ (৫) লঙ্ঘন করেছে। এ ছাড়া ডিএসইর সিআরও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড অ্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন) রেগুলেশন-২০১৩ এর ১৬ (৩) লঙ্ঘন করেছে, ডিএসই লিস্টিং রেগুলেশন-২০১৫ এর ৫৪ (১) লঙ্ঘন করেছে এবং ডিএসইর ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি বোর্ড অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেগুলেশন-২০১৩ এর ৮ (২) ও ৯ (৫) লঙ্ঘন করেছে। এসব আইন ভঙ্গের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর প্যানেল প্রভিশন অব সেকশন ২২ লঙ্ঘন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান এবং মিনহাজ মান্নান ইমনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com