শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১০ পূর্বাহ্ন
মোহাম্মদ জামশেদঃ- অসহায় ও অসচ্ছল পরিবারের সন্তান ইমন(২২)। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে। তার উপরে সংসারের বোঝা। তাই শিক্ষার আলো দেখেনি চোখে। প্রতিদিনের ন্যায় জীবিকার জন্য বের হয়ে গেলেন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। কাজ করেন অ্যালুমিনিয়ামের দোকানে।
৩০ নভেম্বর সোমবার সকাল ১১টায় হাটহাজরী কলা বাগান বাসস্টেশন আলিফ হসপিটাল সংলগ্ন গাউছিয়া মার্কেটের ৩ তলার উপরে সাইনবোর্ড লাগাতে উঠে ইমন। ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনের সামনে ও পিছনে রয়েছে ১১/৩৩ হাজার ভোল্টেজের বিদ্যুৎ লাইন অসাবধানতাবস্থায় ছুটে বৈদ্যুতিক লাইনের উপর পড়ে যায়। পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আহত হয়ে, শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ ঝলসে যায়। মুহুর্তেই আলিফ হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তপক্ষ ইমনকে চমেক হাসপাতাল পাঠিয়ে দেয়। এতে চমেক এর ৩৬ নং বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে ভর্তি করলেও অবস্থার অবনতি দেখা দিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রেফার করে। কিন্তু ভাগ্যের নির্ম পরিহাস কুমিল্লা পর্যন্ত পৌছাতেই গুরুতর আহত ইমনের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। পরিবারের একমাত্র উপাজর্নের ভরসা তরতাজা প্রাণ কেড়ে নেয় ঘাতক বিদ্যুৎ। এর আগেও একই এলাকায় বিভিন্ন সময়ে ৪ জনের প্রাণ চলে যায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে। আইন না মেনে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণে বার বার দুর্ঘটনা সংগঠিত হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।
নিহত ইমন হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড শাহ আহমদের বাড়ির সিএনজি চালক জাগির আহমদের পুত্র। তিন ভাই দুই বোন এর মধ্যে ইমন বড়। সে কলাবাগান ক্লাসিক থাই অ্যালুমিনিয়ামের দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
এদিকে ইমনের আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদ জানলে নিস্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। তার মা বাবা সন্তান হারিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে বার বার মোর্চা যাচ্ছেন। আকাশ বাতাস হয়ে উঠেছে ভারী। ছুটে এসেছে দিকবেদিক থেকে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার লোকজন। ১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় আলাওল দীঘি পাড় মসজিদ মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুতে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।