বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
রাজধানীর তুরাগের বামনারটেক এলাকায় ১০ তলা ভবনের ছয় তলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ২জন সংবাদকর্মী কিশোর গ্যাং লিডার নিলয় ও আরিফের গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়।
বুধবার (২৬জানুয়ারি ) রাত ০৯ টার সময় পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার ঘটনাটি ঘটে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ এর সময় স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর ফোনের মাধ্যমে জানা যায়, বামনারটেক ১০ তলা ভবনে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে, ঘটনাটির বিষয়ে জানতে পেরে আমার সংবাদ পত্রিকার তুরাগ থানা প্রতিনিধি মিরাজ শিকদার ও আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার তুরাগ থানা প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান আশিক ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহ করতে যান। তারা ভবনটিতে প্রবেশ করলেই তাদের সাথেই ওই ভবনে প্রবেশ করেন কিশোর গ্যাং লিডার নিলয় ও তার গ্যাংয়ের ৬ থেকে ৭ জন সদস্য। তারা সংবাদকর্মীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিলেন এবং বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ করায় বাধা দেওয়ার চেস্টা করছিলেন। এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ড নিহত হওয়া যুবতী জান্নাতুল ফেরদৌস কাকলী (২৪) এর মা সাংবাদিকদের হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ জানান। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে কাকলীকে হত্যা করে এখন বলা হচ্ছে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়েকে জোরপূর্বক ভাবে আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।আমার মেয়ের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। হত্যাকারী আবুল হাসেম ও তার পরিবার।আমার মেয়েকে তারা মেরেছে আমি এর সুস্থ বিচার চাই।” এই বক্তব্যটি ধারণ করার সময় কিশোর গ্যাং লিডার নিলয় ও তার সহযোগীরা সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে প্রশাসনের অনুমতি পেলে সংবাদকর্মীরা ঘটনাটি যেই ফ্ল্যাটে ঘটে সেই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হত্যাকারী অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হওয়া কথিত স্বামী মোঃআবুল হাসেমের ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার আরিফ ও তার পরিবার সংবাদকর্মীদের বার বার বাধা ও বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকেন।
এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এস আই গোবিন্দ ভুক্তভোগী পরিবারের বড় ছেলের কাছ থেকে খালি কাগজে সিগনেচার নিচ্ছিলেন দেখে সংবাদকর্মীরা এটা কিসের স্বাক্ষর জানতে চাইলে এস আই গোবিন্দ তাদের সাথে অসদাচরণ করেন এবং লাশ ও আসামীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। অতঃপর গ্রেফতারকৃত আসামী হাসেমকে পুলিশ ভ্যানে উঠানোর সময় ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন উপস্থিত সাংবাদিক মিরাজ শিকদার ও মাহমুদুল হাসান আশিক। এটি দেখে কিশোর গ্যাং লিডার নিলয় ও আরিফের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জন গ্যাংয়ের সদস্যরা হামলা করে তাদের ক্যামেরার ব্যাগ ও ক্যামেরা নিয়ে যায়। দফায় দফায় দুই সংবাদকর্মীর উপর হামলা করেন ওই গ্যাং। হামলার শিকার হয়ে পুলিশের গাড়িতে উঠার চেস্টা করলে পুলিশ ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। পুলিশের এমন আচরণের সুযোগে হামলাকারীরা আবারও হামলা করে সংবাদিক মাহমুদুল হাসান আশিক ও মিরাজের উপর। তারা আশিককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়, মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়।
বিষয়টি জানতে পেরে উত্তরায় বসবাসরত সংবাদকর্মীরা থানায় আসে মামলা করার জন্য।কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ ২ ঘন্টা সময় সাংবাদিকদের থানায় প্রবেশ করতে দেয়নি বরং অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান জানান, “আপনারা আগামীকাল আসেন আপনাদের কথা শুনবো।” অতঃপর প্রায় ৩ ঘন্টা পর একটি অভিযোগ গ্রহণ করেন তুরাগ থানা কর্তৃপক্ষ।
থানার সামনে অবস্থানরত সাংবাদিকরা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হামলাকারীর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানান।
এবিষয়ে জানার জন্য ঢাকা উত্তর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, ‘আমরা স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করতে পারিনি।তারা শুধুমাত্র অভিযোগ নিয়েছে। আমরা স্থানীয় থানায় এর কোন সুফল না পেলে আমরা কোর্টের দ্বারস্থ হবো।’