শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর ওপর ৫২ বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু। ফলে ৯টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এলাকাবাসী এখানে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে। কিন্তু এখন সেটিও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। এতে ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হারাগাছ পৌর এলাকা তিস্তা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল। চার ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে তিস্তা নদী। এখানে সেতু না থাকায় রাজপুর ইউনিয়নের চিনাতুলি, প্রেমের বাজার, খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তালপট্টি, হরিণচড়া, মিলনবাজার, টাংরির বাজার, হারাগাছ পৌরসভার চরচতুরা, ধুমগাড়া, হারাগাছ ইউনিয়নের পল্লীমারী গ্রামের লক্ষাধিক মানুষকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে হারাগাছ পৌরসভা ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। শুষ্ক মৌসুমে নদী শুকিয়ে গেলে হেঁটে চলাচল করা যায়। হারাগাছ পৌরসভার গোল্ডেনের ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বারবার আশ্বাস দিলেও সেতু হয়নি। এ অবস্থায় ২০১৩ সালে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে ৩১০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন তারা। সেটিও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। এতে ওই সাঁকো দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
হারাগাছ পৌর এলাকার বাসিন্দা মোজাহার আলী বলেন, ‘তিস্তা নদীর ওপারে পাঁচটি বাজার, পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসা রয়েছে। এপারেও অনেক ঘরবাড়ি। সেতু না থাকায় বছরের পর বছর মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও সেতু হয়নি।’
গোল্ডেন ঘাট এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন ও সাজ্জাদ আলী জানান, তাদের যাতায়াতের একমাত্র বাঁশের সাঁকোটির অবস্থা বেহাল। চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের।
স্থানীয় শিক্ষক মো. শাহজাহান বলেন, ‘ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয়। নদীর ওপারে স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। সবাই বলে সেতু হবে, কিন্তু হয় না। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হারাগাছ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল কাদের রানা বলেন, ‘গোল্ডেনের ঘাটে একটি সেতু নির্মাণ খুবই জরুরি। কারণ পৌর এলাকার ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। এ ব্যাপারে বর্তমান পৌর মেয়রের সঙ্গে অনেকবার কথা হয়েছে। প্রকৌশলীরা এসে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করে গেছেন। কিন্তু কবে সেতু হবে, আদৌ হবে কিনা; তা জানি না।’
সেখানে সেতু নির্মাণ হবে কিনা জানতে চাইলে হারাগাছ পৌরসভার মেয়র এরশাদুল হক বলেন, ‘মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আমরা সেখানে সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ নিয়েছি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’