শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
টানা দু’সপ্তাহের অবরোধে আটকে থাকার পর অবশেষে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে ত্রাণ পণ্যবাহী ট্রাক। রাফাহ ক্রসিং থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
রাফাহ ক্রসিং থেকে আলজাজিরার প্রতিনিধি তার নিউজ স্টেশনকে জানিয়েছেন, ‘আমরা ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ সামগ্রীবাহী প্রথম ট্রাকটিকে গাজায় প্রবেশ করতে দেখেছি।’
আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রেড ক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মিসর শাখার বরাত দিয়ে একই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপিও।
গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের জনসংযোগ বিভাগ থেকে দেওয়া এক বার্তায় এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘আজ রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ পণ্যবাহী ২০টি ট্রাক প্রবেশের কথা রয়েছে। এসব ট্রাকে ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ও সীমিত পরিমাণে ক্যানজাত খাবার রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত মিশরের সিনাই মরুভূমি থেকে গাজা উপত্যকাকে পৃথক করা এই সীমান্তপথটি উপত্যকার সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। গাজা থেকে বের হওয়ার আরও দু’টি সীমান্তপথ রয়েছে, কিন্তু সেগুলো ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে এবং ইসরায়েলের ইচ্ছে অনুযায়ী সেগুলো খোলা বা বন্ধ থাকে।
৩৬৫ কিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ড গাজায় বসবাস করেন প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি, যাদের এক তৃীতিয়াংশেরও বেশি সরাসরি জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার ত্রাণ এবং আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। অপর দুই সীমান্ত প্রায় সময়েই বন্ধ থাকায় এই রাফাহ ক্রসিং দিয়েই গাজা ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ত্রাণের সরবরাহ। এ কারণে এই ক্রসিংটি গাজার ফিলিস্তিনিদের ‘লাইফ লাইন’ নামেও পরিচিত।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার উত্তর দিকের সীমান্ত ইরেজ দিয়ে ইসরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালায় উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে ওই দিনই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ), যা এখনও চলছে।
প্রায় একই সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং এলাকায়ও আইএএফ বোমা বর্ষণ শুরু করলে মিসর ওই সীমান্তপথ বন্ধ করে দেয়।
ফলে একদিকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা অভিযান এবং অন্যদিকে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রীর সরবহা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দু’ সপ্তাহের যুদ্ধে মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা।
এ পরিস্থিতিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার ইসরায়েল সফরে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই সফরে এই ক্রসিং খুলে দিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল সিসিকে আহ্বান জানান তিনি। নেতানিয়াহু এবং সিসি সেই আহ্বানে সাড়াও দেন।
সফর শেষে সেদিনই ওয়াশিংটনে ফিরে আসেন বাইডেন। ফেরার আগে ইসরায়েলের বিমানবন্দরে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মিসর রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছে। আশা করছি, শুক্র বা শনিবারের মধ্যেই এই ক্রসিং খুলে যাবে।’