রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন জাতিসংঘের ৫৯ কর্মী। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অবিরাম বিমান হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তারা। অন্যদিকে একই সময়সীমায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। রোববার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজায় ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির (ইউএনডব্লিউআরএ) ৫৯ জন কর্মী নিহত হয়েছেন বলে রোববার জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইউএনআরডব্লিউএ-এর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় হামলায় প্রাণ হারানো ইউএনআরডব্লিউএ কর্মীদের সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের সহকর্মীদের নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জাতিসংঘ এবং ইউএনআরডব্লিউএর জন্য প্রতিটি দিন এক একটি অন্ধকার দিন হয়ে উঠছে।’
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
হামাসের এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪০০ ইসরায়েলি। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্য রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি। এছাড়া আরও ২২৯ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
এই ঘটনার জের ধরে গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫ জনে। নিহতদের মধ্যে ৩ হাজার ৩৪২ শিশু, ২ হাজার ৬২ জন নারী এবং ৪৬০ জন বয়স্ক মানুষ।
এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে। একইসঙ্গে গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পরে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএনডব্লিউআরএ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননে স্কুলিং (শিক্ষা), প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবিক সহায়তাসহ অন্যান্য মানবিক সেবা প্রদান করে আসছে।