বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক নারীর প্রতি সহিংসতা সামজিক ব্যাধি দুর করতে হবে : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

আমানতের সীমা বেঁধে দিয়ে আইন পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মের বেড়াজাল ও মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই) এখন ব্যাংকগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেও নতুন আমানত পাচ্ছে না। অপরদিকে এসব প্রতিষ্ঠানে জেঁকে বসা অনিয়ম-দুর্নীতি গ্রাহকদের টাকা রাখতে নিরুৎসাহিত করছে। এর ফলে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনা অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আইন পাস করে আমানতের সীমা বেঁধে দেওয়া হলো। নতুন নিয়মে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনও ব্যক্তি একক নামে ৫০ লাখ টাকার বেশি রাখতে পারবেন না। ফলে অনিয়মে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এ খাতের ভালো প্রতিষ্ঠান থেকেও আমানত এখন চলে যাবে। এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টরা শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এমডি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, যেসব আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হবে, নতুন আইনের কারণে বেশিরভাগ আর নবায়ন করতে পারবে না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান তহবিল সংকটের কারণে আমানতের টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিতেও পারবে না। তিনি উল্লেখ করেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে— যেসব প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তারা। যেসব আমানতের মেয়াদপূর্তি হবে, আইনের কারণে তা চলে যাবে অন্য প্রতিষ্ঠানে।

প্রসঙ্গত, কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা বা যৌথ নামে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা, বা সময় সময় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সীমার বেশি আমানত গ্রহণ করতে পারবে না।’ এই বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল, ২০২৩’ পাস করা হয়েছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে চলা অধিবেশনে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়।

বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। তবে এর মধ্য দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি যে কমবে, এমনটি কেউ মনে করছেন না।

এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ব্যাংকের ক্ষেত্রে কোনও একক পরিবার ১০ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারে না। ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেটি ১৫ ভাগের কথা বলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে মন্দ যদি নাও বলি, আমানতের সীমা ৫০ লাখ টাকা বেঁধে দেওয়ায় ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিপদে পড়বে। ভালো প্রতিষ্ঠান থেকে আমানত চলে যাবে।’ আইন পাসের পরের দিন গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্ব) থেকেই আমানতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি উল্লেখ করেন, যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে চলছে, নতুন এই আইনের কারণে তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে অচিরেই ভালো প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়বে। এই সেক্টর একসময় অকার্যকর হয়ে পড়বে। এতে অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমানতের সীমা ৫০ লাখ টাকার এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ব্যাংক-বহির্ভূত এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ভাষ্য হলো— ব্যাংকের মতো সাধারণ গ্রাহকরা সাধারণত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোযতে টাকা রাখেন না, কিছু বাছাই করা গ্রাহক, বিশেষ করে যাদের বেশি টাকা রাখার সামর্থ্য আছে, কেবল তারাই এখানে আমানত রাখেন। যেসব গ্রাহকের এক কোটি বা দুই কোটি টাকা বা তার বেশি টাকা রাখা আছে, নতুন আইনের কারণে তাদের ধরে রাখা সম্ভব হবে না। যদিও এমনিতেই নতুন করে আমানত পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ ব্যাংকের সুদের হার আগের চেয়ে বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের মতো চলতি আমানত নিতে পারে না। সর্বনিম্ন তিন মাস মেয়াদি আমানত নিতে পারে। এর ফলে আমানত কমে যাচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, জুন প্রান্তিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের প্রবৃদ্ধি মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে মাত্র ২.২৫ শতাংশ।

নাম প্রকাশ না করে একটি প্রতিষ্ঠানের এমডি বলেন, আমানত ৫০ লাখ টাকার সীমা নির্ধারণ করার ফলে এ খাতে বহুমুখী সমস্যা তৈরি হবে। যেসব গ্রাহকের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে, এখন সেই আমানত নবায়ন করতে হবে, কিন্তু আইনের কারণে ৫০ লাখ টাকার বেশি আমানত নবায়ন হবে না। অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে পর্যাপ্ত নগদ টাকা নেই। তারা না পারবে টাকা ফেরত দিতে, না পারবে আইন মানতে।

উল্লেখ্য, গ্রাহকের আমানত থেকেই প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেয়। ফলে এই আইনের কারণে আর্থিক সংকট দেখা দিবে প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

অবশ্য একক নামে আমানতের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ লাখ টাকা করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমানতকারীদের অনেকেই উচ্চ সুদের প্রলোভনে পড়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে টাকা রেখে— এখন বাংলাদেশ ব্যাংকে এসে অভিযোগ করছেন যে, অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছে না। ব্যাংকের তুলনায় বেশি লাভের আশায় অনেকেই এখন আটকে গেছেন। এখন টাকা তুলে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এসে ঘুরছেন তারা। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে কিছুই করতে পারছে না। আগামীতে যেন কারও ক্ষেত্রে এ রকম না হয়, সে জন্যই এমন ধারা যুক্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকটা তড়িঘড়ি করে আইনটি পাস করা হয়েছে। বিশেষ করে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কোনও রকমের আলোচনা না করেই এই আইনে আমানতের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ লাখ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩’ এর খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এর ৬ দিন পর ২৯ অক্টোবর ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল-২০২৩’ সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি যাচাই করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এর পর ১ নভেম্বর বিলটি পাস করা হয়।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন— এই ছয় মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত বেড়েছে ৯৩০ কোটি টাকার বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষে এই খাতে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। এ বছরের জুন শেষে যার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা।

ফাইন্যান্স কোম্পানি বিলের অন্যান্য দিক

কোনও ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। এই আইন কার্যকর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত শেয়ার থাকলে তা হস্তান্তর করতে হবে। এটি না করলে অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এসব বিধান সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এতে আরও বলা হয়েছে, কোনও পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে দুই জনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবেন না। শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দুই জন পরিচালক থাকতে পারবেন। আর শতকরা ২ থেকে ৫ ভাগ শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন।

পরিবারের সংজ্ঞাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে নতুন আইনে। পরিবার বলতে স্ত্রী বা স্বামী, পিতা-মাতা, পুত্র-কন্যা, ভাইবোন এবং ওই ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল সবাইকে বোঝাবে। আইনে দুজন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ ১৫ জন পরিচালক থাকতে পারবে।

বিদ্যমান আইনে একজন ব্যক্তি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কত শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারবেন, এটি বেঁধে দেওয়া ছিল না। নতুন আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির সংজ্ঞা সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

নতুন এই আইনে কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ার জামানত রেখে কোনও ব্যক্তিকে ঋণ বা অন্য কোও আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না। কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানি বেনামি বা অস্তিত্বহীন বা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে কোনও প্রকার ঋণ বা অন্য কোনও আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না।

এছাড়া কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনও ব্যক্তিকে ১০ লাখ টাকা অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত পরিমাণের বেশি ঋণ প্রদান করবে না বলেও বিলে দেখানো হয়। বলা হয়, কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানি বিনা জামানতের কোনও পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্য ঋণ বা অন্য কোনও আর্থিক সুবিধা নিতে পারবে না

এসব শর্ত লঙ্ঘন করে কোনও পরিচালক বা কর্মকর্তা এসব সুবিধা-প্রদান করলে, এটি অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ ধরনের অপরাধের জন্য ওই ব্যক্তি অনধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা সাবেক পরিচালক ও তার পরিবার বা অন্য কোনও ব্যাংক কোম্পানি বা ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা সাকেব পরিচালক ও তার পরিবারের গৃহীত ঋণের ওপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করলে, অথবা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত কোনও ব্যক্তির ওপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করলে, এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব তিন বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এতে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তিকে তিনটি কারণে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে গণ্য করা যাবে। সামর্থ্য থাকার পরও যদি ঋণ সময়মতো পরিশোধ না করেন, যে কারণ দেখিয়ে ঋণ দিয়েছেন— সেই কারণে ব্যবহার না করে যদি ঋণ অন্য কারণে ব্যবহার করেন এবং যেসব কাগজপত্র জমা দিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন, পরে সেগুলো যদি ভুয়া বলে চিহ্নিত হয়— তাহলে ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে। এরূপ মামলা সংশ্লিষ্ট ঋণ বা অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে না। এরূপ খেলাপিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশ ভ্রমণ এবং ট্রেড লাইসেন্সে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছাড়াও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কাছে কোম্পানি নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।

নতুন আইনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা ও শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। লাইসেন্সের শর্ত না মানার শাস্তি ১০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে। বিদেশিরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। কী পরিমাণ শেয়ার বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি পাবে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকতে পারবে না।

বিলে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনও ব্যক্তি লাইসেন্স ছাড়া অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করছে বা কোও সময় করেছিল, বা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি তদন্ত করতে পারবে। তবে লাইসেন্সবিহীন অর্থায়ন ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তি তদন্তকাজে অসহযোগিতা করলে, ওই ব্যক্তি অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনও ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব বই, হিসাব প্রতিবেদন, কোনও বিবরণী, ব্যবসা সংক্রান্ত কাগজ বা অন্যান্য দলিলে মিথ্যা কিছু সংযোজন করলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক তিন বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com