বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক নারীর প্রতি সহিংসতা সামজিক ব্যাধি দুর করতে হবে : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

অবরোধে অনলাইন-অফলাইন ক্লাস ঘোষণা , ভোগান্তিতে শিশুরা

অবরোধে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হয় শিশুদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

মনে আছে কোভিডের সময়ে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকাকালে অনলাইন ক্লাসের অভিজ্ঞতা? দিনের পর দিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর যখন অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তারপর প্রস্তুতি নিতেই কেটে যায় মাসের পর মাস। রাজধানীতে অনলাইন ক্লাস কিছুটা সহজ থাকলেও সারা বছর ঠিকমতো অনলাইনে ক্লাস নেওয়া যায়নি এমন স্কুলেরও খোঁজ মেলে। টানা অবরোধে আবারও সেই অনলাইন ক্লাস ফিরে এসেছে বটে, কিন্তু কোভিডকালের মতো অভিভাবকদের অফিস বন্ধ না থাকায়— শিশুদের অনলাইন ক্লাসে বসা প্রায় হচ্ছেই না। আর অফলাইনে যে স্কুলগুলো এখনও খোলা আছে, সেখানে ভীতির কারণে উপস্থিতি কম। সব মিলিয়ে বছর শেষে আবারও শিক্ষাকার্যক্রম নিয়ে শিশুরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে।

২৮ নভেম্বরের পর থেকে চতুর্থ দফায় ১২ নভেম্বর রবিবার সকাল ৬টা থেকে ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টা সড়ক, নৌ ও রেলপথে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এদিকে জামায়াতে ইসলামীও আলাদাভাবে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির এই যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, এলডিপি, লেবার পার্টিসহ সমমনা দলগুলোও পৃথকভাবে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, সংবাদপত্রের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার বহনকারী গাড়ি ও জরুরি ওষুধ পরিবহন অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।

গত তিন দফার অবরোধের চিত্র থেকে দেখা যায়, রাজধানীর সরকারি সব স্কুল খোলা এবং সরকারি- বেসরকারি সব অফিসও ছিল স্বাভাবিক দিনের মতো। যদিও প্রথম দুই দফা অবরোধে রাস্তায় গাড়ি প্রায় ছিলই না। তবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো শুরুর দিন থেকে চার বছরের প্লে-গ্রুপের শিশু থেকে শুরু করে সবার জন্য অনলাইনে ক্লাসের ঘোষণা দেয়। এতে বিপত্তিতে পড়েছেন অভিভাবকরা।

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক অভিভাবক বলেন, সকাল ৯টায় স্কুলে দিয়ে আমরা অফিসে চলে যাই। অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে সাড়ে ৯টায় ক্লাস শুরু হবে। আমার মেয়ে নার্সারির শিক্ষার্থী, তাকে অনলাইন ক্লাস করানো কীভাবে সম্ভব? একইসঙ্গে টিচাররা কিছু হোমওয়ার্ক অনলাইনে দিয়ে দেন, সেটা করিয়ে জমা দিলেও হয়। কিন্তু এটাতো যথাযথ সময়ে দেওয়া সম্ভব না। সন্ধ্যায় অফিস শেষে বাসায় ফিরে তারপর তাকে দিয়ে হোমওয়ার্ক করিয়ে রাত-বিরাতে পাঠাতে হয়। এভাবে কী শিখবে? এটাতো স্কুলের করার কিছু নেই, এভাবে অবরোধ কার কোন কাজে আসছে, এটা আরও বেশি বেশি মিডিয়ায় আসা জরুরি।

রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসার জন্য আমরা আমাদের জীবনকে আরও কঠিন করবো, নাকি জনগণের ভালোমন্দ ভাববো, সেটা আলাপ করা উচিত।

সরকারি স্কুলে ক্লাস ফাইভে শিক্ষার্থীকে স্কুলের গাড়িতে তুলে দেওয়ার সময় এক মা বলেন, অবরোধে গাড়িতে করে স্কুল পাঠাচ্ছি বটে, কিন্তু বাসায় না ফিরে আসা পর্যন্ত প্রাণটা হাতে নিয়ে বসে থাকি। আবার স্কুল যেহেতু খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেক্ষেত্রে আমার সন্তানকে দিনের পর দিন স্কুল না পাঠিয়েও থাকা যাচ্ছে না। এই উভয় সংকটে পড়ে আছে মানুষ। আমাদের কথা কি কেউ ভাববে না?

শিক্ষার্থীদের এই সংকট ও করণীয় এবং অবরোধের কার্যকারিতার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বলা হচ্ছে, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা এই অবরোধের লক্ষ্য। আমার তা মনে হয় না। এদের অবস্থান হলো— এত কিছু বুঝি না, শেখ হাসিনাকে উৎখাত করো।’

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক প্রিন্সিপাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা জানি, শিশুদের খুব কষ্ট হচ্ছে অনলাইনে ক্লাসের সঙ্গে তাল মেলাতে। কিন্তু এটা রেখেছি শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগটা অব্যাহত রাখতে। দেখি কতদিনে সব শান্ত হয়। চারদিকে যেভাবে গাড়ি পোড়ানো হয়, এরমধ্যে শিশুদের আমরা স্কুল পর্যন্ত টেনে আনা মোটেই নিরাপদ মনে করছি না।

এই টানা অবরোধ কেবল জনগণকে জিম্মি করে নিজেদের দাবি আদায়ের কৌশল ছাড়া কিছু নয়। তারা জনগণকে কী দেবে? এই শিশুরা কীসের মধ্য দিয়ে বড় হচ্ছে। টানা একবছর কোভিডে চলে গেছে, শিক্ষায় তার প্রভাব কাটানোর আগেই আবারও এ ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে গেলো। স্কুলগুলোর আসলে কিছু করারও নেই। যারা অবরোধ ডাকছে তাদের বিবেচনা করতে হবে। বিএনপি মূলত নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে চায় এবং একটি অরাজকতা তৈরি করতে চায়। এর পুরো ভোগান্তিটা মানুষের জীবনের ওপর দিয়ে যাচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com