বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর উত্তরায় অপ-সাংবাদিকতা ও নামধারী ভুয়া সাংবাদিকদের প্রতিরোধে প্রশাসন সহ সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা চাইলেন উত্তরা প্রেসক্লাবের সভাপতি বদরুল আলম মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ।
গতকাল বুধবার রাতে উত্তরা প্রেসক্লাব ১২নং সেক্টর খালপার অফিসে এক মতবিনিময় সভায় উত্তরায় ভুয়া ও নামধারী চাঁদাবাজ সাংবাদিকদের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উত্তরায় বসবাসরত বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা সার্টিফিকেটহীন ভুয়া ও নামধারী সাংবাদিকের উৎপাতের কারণে প্রকৃত সাংবাদিকদের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে বলে মতামত উঠে আসে।
সভায় উত্তরা প্রেসক্লাবের সভাপতি বদরুল আলম মজুমদার গণমাধ্যম কর্মীদের উদেশ্য বলেন, উত্তরায় বসবাসরত সাংবাদিকদের নিয়ে ২০২১ সালে উত্তরা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ক্লাবের সদস্য হওয়ার যোগ্যতায় ৫ বছরের অভিজ্ঞতা আছে এমন সাংবাদিকদের কমপক্ষে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের শিক্ষা সনদ থাকা বাধ্যতামুলক করা হয়। কিন্তু ক্লাব গঠনের সাথে জড়িত কিছু অসাধু চক্র ভোট বাড়ানোর উদ্দেশ্য কথিত নামধারী ভুয়া সাংবাদিকদের সদস্য করে ব্যপক চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়। এতে প্রকৃত সাংবাদিকদের মান মর্যাদা ভুলুন্ঠিত হয়। এ অবস্থা থেকে ক্লাবকে কলঙ্ক মুক্ত করার লক্ষ্যে, ক্লাব প্রতিষ্ঠিত সদস্যদের দিয়ে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি করা হয়। যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশের আলোকে এবং ক্লাবের নামে চাঁদাবাজি ও অর্থ তুছরুপের দায়ে চক্রটির ২০ জন সদস্য ক্লাব থেকে বহিষ্কৃত হয়। তাছাড়া গত ৮ জানুয়ারি ক্লাবের এজিএম এ অর্থ তুছরুপ ও নানা অনিয়মের কারণে সাবেক সম্পাদক দেলোয়ারকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
সভাপতি আরো বলেন, ক্লাবের ক্ষমতা দখল এবং ক্লাবের নামে চাঁদাবাজি চালু রাখতে একটি চক্র যাদের অধিকাংশের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা ও নূনতম এসএসসি পাশের সাটিফিকেট পর্যন্ত নাই। তারা একত্রিত হয়ে উত্তরা প্রেসক্লাব নামে আরেকটি সমান্তরাল সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে পিকনিকসহ নানা ওকেশনে কার্ড বাণিজ্য করে যাচ্ছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি। উত্তরা প্রেসক্লাব থেকে ৬ জন সদস্য বের হয়ে ক্লাব বিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হয়েছে যা সংগঠন পরিপন্থী। ৯০ শতাংশ সদস্য উত্তরা প্রেসক্লাবের ব্যনারে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও কতিপয় নামধারী সাংবাদিক নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
সভায় ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বলেন, গঠনমূলক বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা এবং সুশৃঙ্খল সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা উত্তরা থেকে ভুয়া এবং নামধারী সাংবাদিকদের উৎপাত বন্ধ করতে চাই। এজন্য স্থানীয় প্রশাসন, ব্যবসায়ী সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকার সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। এসব নামধারীদের কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা আপনারা করবেন না। এদের প্রতিরোধে সর্বাত্মক সহযোগিতা আমরা করবো। তিনি আরো বলেন, আপনার সহযোগিতা না পেয়ে এসব ভুয়া সাংবাদিকরা যদি কোন ভুয়া সংবাদ প্রচার করে তাহলে উত্তরা প্রেসক্লাব সকল ধরনের সহযোগিতা নিয়ে আপনাদের পাশে থাকবে। ইতিমধ্যে এসব ভুয়াদের একটি অংশ আমাদের ক্লাবের সভাপতিসহ নেতাদের বিরুদ্ধে নানা মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করে চরিত্র হননের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা জানাই। এসমস্ত শত প্রতিকুলতার মাঝেও উত্তরায় আমরা ভুয়া সাংবাদিক মুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাই।
সভায় সিনিয়র সহ সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, আমি উত্তরাবাসীকে অনুরোধ জানাতে চাই, আপনারা ভুয়াদের প্রতিহত করেন। সাংবাদিক পরিচয় দিলে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ অন্যান্য বিষয়ে প্রশ্ন করেন। নাম পরিচয়হীন এসব ভুয়াদের দৌরাত্ব বন্ধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি উত্তরায় বসবাসরত প্রকৃত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য বলেন, আপনারা গুটি কয়েক সাংবাদিক যাদের শিক্ষা আছে, ভালো সংবাদ মাধ্যমে কাজ করেন, আপনারা এসব মাদক ব্যবসায়ী, চরিত্রহীন ভুয়া সাংবাদিকদের পরিহার করেন। কারণ আপনাদের আশকারা পেয়ে ভুয়ারা আজ আরো বেশী বেপরোয়া। এর দায় একদিন আপনাকেও নিতে হবে।