শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক নারীর প্রতি সহিংসতা সামজিক ব্যাধি দুর করতে হবে : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত উপসচিবদেরকে পদোন্নতির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

নিজস্ব প্রতিবেদক : সচিবালয়ে সরকারের নীতি নির্ধারণী কার্য সম্পাদনের জন্য উপসচিব ও তদুর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সিনিয়র সার্ভিস পুল গঠন করা হয়। ‘সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২’ অনুযায়ী প্রশাসন ক্যাডার হতে ৭৫% এবং অন্য ২৫ টি ক্যাডার হতে ২৫% উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে এ পুল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যদিও প্রশাসন ক্যাডার-এর সদস্য সংখ্যা ৪,৮৯৯ জন (৯.৬২%) এবং অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪৬,০২৩ জন (৯০.৩৮%)।

পরবর্তী পদোন্নতি, অর্থাৎ যুগ্মসচিব ও তদুর্দ্ধ পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পিএসসির সুপারিশকৃত স্ব স্ব ব্যাচের সম্মিলিত মেধাতালিকা, সরকারি চাকরি আইন, পদোন্নতি বিধিমালা, সুপ্রীমকোর্টের রায় কোন কিছুই মানা হয় না। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের সকল কর্মকর্তার নিয়মিত ব্যাচের সাথে পদোন্নতি নিশ্চিত থাকলেও অন্য ২৫টি ক্যাডারের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক কোটা আরোপ করে প্রশাসন ক্যাডারের অনেক জুনিয়র ব্যাচের সাথে স্বেচ্চাচারমূলক নামমাত্র ১০-১২% পদোন্নতি দেওয়া হয়।

এ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ থেকে ২২ ব্যাচের অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য দুই শতাধিক কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠতা হারিয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে তাদের অনেক জুনিয়র কর্মকর্তার অধীনে কাজ করতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন গোটা জনপ্রশাসন মেধাহীন ও দক্ষ জনবলশূন্য হয়ে পড়েছে, অপরদিকে জনপ্রশাসনে চেইন অব কমান্ডও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বিগত সরকার আমলে প্রশাসন ক্যাডারের দুবৃত্ত কতিপয় কর্মকর্তা এ বে-আইনী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একটি মেধাশূন্য, মেরুদণ্ডবিহীন, রাজনৈতিক পদলেহনকারী জনপ্রশাসন তৈরি করেছে। তাদের প্রেতাত্মা এখনও সক্রিয় থেকে একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে—যা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল বর্তামন সরকারের নীতি-আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু হলো সচিবালয়। সচিবালয় অনেকগুলো মন্ত্রণালয়/বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত। এর মধ্যে একটি মন্ত্রণালয় হল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ হলো সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের জন্য মেধাভিত্তিক দক্ষ জনসম্পদ তৈরি ও ব্যবস্থাপনা। কিন্তু মন্ত্রণালয়টি কার্যত ‘প্রশাসন’ নামক একটি ক্যাডারের স্বার্থ রক্ষার মন্ত্রণালয়ে পরিণত হয়েছে। ফলে সরকারের স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ইতোপূর্বে জনপ্রশাসন সিনিয়র সচিব মহোদয়ের বরাবরে আবেদনপূর্বক এসএসবির সকল সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুলিপি প্রদান করা সত্ত্বেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসএসবি’র সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগে সুপিরিয়র জনবল নিয়োগ ও পদায়ন করে থাকে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ইহার সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। অন্য সদস্যরা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, অর্থসচিব, জননিরাপত্তা সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব এবং কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল। তাঁদের উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে সরকারের উপসচিব ও তদুর্ধ্ব পদের জনবল। সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করে কর্মকর্তাদের মেধা, জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুপারিশ করা তাঁদের একমাত্র কাজ।

পদোন্নতির জন্য তাদের সামনে থাকতে হবে কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতার তালিকা, তাদের সার্ভিস রেকর্ড এবং সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন। প্রত্যেক ক্যাডারের আলাদা আলাদা জ্যেষ্ঠতার তালিকা থাকলেও যখন উপসচিব হিসেবে পুল সৃষ্টি হয়, তখন তাদের জন্য অনুসরণীয় একমাত্র জ্যেষ্ঠতার তালিকা হল পিএসসি কর্তৃক নির্ধারিত মেধাতালিকা। কিন্তু এসএসবি সেই তালিকা অনুসরণ করে না; বরং প্রশাসন ক্যাডারকে ভিত্তি ধরে পদোন্নতি দিয়ে থাকে। এর ফলে কেবল প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণই যথাসময়ে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ এই এসএসবি কেবল একটি ক্যাডারকে প্রোমোট করার বোর্ড হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

বিষয়টি এতটাই ন্যাক্কারজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রশাসন ক্যাডারের সাথে মার্জ হওয়ার কারণে এই এসএসবি ইকোনমিক নামক একটি টেকনিক্যাল ক্যাডারকে (যারা মাত্র ৫০০ নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে এসেছে) সরকারের পুলভুক্ত পদসমূহে রাতারাতি পদোন্নতি প্রদান করেছে। যেমন, ২০২০ সনে প্রশাসন ক্যাডারের সাথে সাবেক ইকোনমিক ক্যাডার একীভূতকালে ফিডার পদে কাজ না করে, মাঠপ্রশাসনে কোনো প্রকার অভিজ্ঞতা না থাকা সত্বেও প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ প্রদান না করেই সরকারের পুলে স্ব-স্ব ব্যাচের সাথে সকলকে রাতারাতি ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

এক্ষেত্রে তাদের অনেকেই ফিডার পদে একদিনও কাজ না করে পর পর ০৩ দিনে একাদিক্রমে ০৩ টি ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পেয়েছেন। এ একীভূতকরণের পূর্বে সরকারের পুলে আসা অন্যান্য ক্যাডার কর্মকর্তারা, যাঁদের জ্যেষ্ঠ্যতা হরণ করে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়েছে, তাঁদের স্ব-স্ব ব্যাচের সাথে জ্যেষ্ঠ্তার সমতা নিশ্চিত করে পদোন্নতি দেওয়া উচিত ছিল। অথচ বাস্তবতা হল, ইকোনমিক ক্যাডার সরকারের পুলের সাথে মার্জ হয়নি, মার্জ হয়েছে প্রশাসন ক্যাডারের সাথে।

তারা প্রশাসন ক্যাডারের পদ পেতে পারে, কিন্তু সরকারের পুলভুক্ত উপসচিব, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদসমূহ তাদেরকে প্রদান করে এসএসবি সকল আইন-কানুন লঙ্ঘন করেছে এবং সরকারের পুলভুক্ত অন্যান্য কর্মকর্তাদের অধিকার হরণ করেছে। এতেও প্রমাণিত হয় যে, এসএসবি মাত্র একটি ক্যাডার এবং সেই ক্যাডারের সাথে মার্জ হওয়া কোনো ক্যাডারের পদোন্নতির বোর্ড ভিন্ন অন্য কিছু নয়। এইরকম একটি একপেশে বোর্ডের কাছে রাষ্ট্র, জনগণ ও সরকারের স্বার্থ নিরাপদ নয়।

২৫ টি বিশেষজ্ঞ ক্যাডার হতে সম্পূর্ণ মেধা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আগত উপসচিবগণকে পদোন্নতি বঞ্চিত করে প্রকারান্তরে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগকে পেশাভিত্তিক ও দক্ষ জনবলের সেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আবার তাদের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতাকে একদিকে সচিবালয়েও যথাযথভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না, অপরদিকে স্ব -স্ব ক্যাডারও তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এসএসবি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভুল নীতি ও কর্মকাণ্ডের কারণে মেধাহীন, কোটারী, জুনিয়রদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারের সচিবালয় বা প্রশাসন ব্যবস্থা। সরকারের বিভিন্ন ক্যাডারে কর্মরতদের মধ্যে মাত্র ৪৫% মেধা এবং ৫৫%-ই বিভিন্ন কোটার অন্তর্ভুক্ত। তবে এর মধ্য থেকে সরকার যখন উপসচিব ও তদুর্দ্ধ পদের জন্য পুল গঠন করে, তখন একমাত্র প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত অন্যান্য ক্যাডারের মেধাতালিকাভুক্ত কর্মকর্তাগণকেই বিবেচনায় আনা হয়। কেননা এ সংক্রান্ত সার্কুলারে সুনির্দিষ্টভাবে বলা থাকে প্রত্যেক ক্যাডারের শীর্ষস্থানীয় সর্বোচ্চ ১০ জনের নাম প্রেরণ করার জন্য।

অথচ এ ধরনের কোন নির্দেশনা প্রশাসন ক্যাডারকে দেওয়া হয় না, তাদেরকে আবেদনও করতে হয় না। ফলে তারা আবেদন না করেই সকলে উপসচিব পদের জন্য বিবেচিত হন। উপসচিব হিসেবে পুলভুক্ত ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৭৫-৮০ জনই প্রশাসন ক্যাডারের – যেখানে উল্লেখযোগ্য অংশই কোটায় চাকরিপ্রাপ্ত।

বিসিএস-এর কোনো একটি সার্কুলারের মোট কর্মকর্তার ১৫-২০% প্রশাসন ক্যাডারের এবং ৮০-৮৫% অন্য ২৫ টি ক্যাডারের। কিন্তু উপসচিব পদে পদোন্নতির সময় চিত্রটি একদম পাল্টে যায়। প্রশাসন ক্যাডার (১৫-২০%) থেকে উপসচিব করা হয় ৭৫-৮০% এবং অন্য ২৫ টি ক্যাডার (৮০-৮৫%) থেকে উপসচিব করা হয় মাত্র ২০-২৫%।

আবার যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির সময় চিত্রটি আবার একদম বিপরীত হয়ে যায়। সম্পূর্ণ মেধা এবং পেশাভিত্তিক বিশেষঞ্জ ক্যাডার হতে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে তাদের স্ব-স্ব প্রশাসন ক্যাডারের ব্যাচের সাথে ১%-কেও পদোন্নতি দেওয়া হয় না। অর্থাৎ প্রশাসন ক্যাডারের যে ব্যাচকে বিবেচনায় নেওয়া হয়, সেই ব্যাচের অন্য ২৫ টি ক্যাডারের কাউকেই (হাতে গোনা ২/১ জন ছাড়া) পদোন্নতি দেওয়া হয় না, অথচ তারা মেধাতালিকার অন্তর্ভুক্ত।

সর্বশেষ যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির আদেশে ২৫ ক্যাডারের সর্বসাকুল্যে ১০% কর্মকর্তাকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে-যারা প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চেয়ে অনেক সিনিয়র এবং বহু আগেই যোগ্যতা অর্জন করা সত্ত্বেও বারবার পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে অবশেষে দৈবচক্রে পদোন্নতি পেয়েছেন। কিন্তু ১৩ থেকে ২২ ব্যাচের ৯০% কর্মকর্তাগণকে এখনও পদোন্নতির জন্য বিবেচনায়ই আনা হচ্ছে না। অথচ এখন প্রশাসন ক্যাডারের ২৪ ব্যাচকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির তোরজোড় চলছে।

উল্লেখ্য, অন্যান্য ক্যাডার হতে পুলভুক্ত উপসচিবগণের পরবর্তী পদসমূহে পদোন্নতির হার পূর্বে ছিল ৩০%, যা কমাতে কমাতে এখন ১০% এ নামিয়ে ফেলা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গোটা প্রশাসনকে কোটানির্ভর, মেধাহীন, বৈষম্যপূর্ণ ও সিনিয়র নিষ্পেষণের হাতিয়ার বানানো হয়েছে।

চাকুরিজীবীদের জন্য জ্যেষ্ঠ্তা কেবল পদোন্নতির অন্যতম প্রধান শর্তই নয়, এটি প্রশাসনিক শৃঙ্খলার মেরুদন্ডও বটে। সরকারি কর্মকর্তাগণ পিএসসি কর্তৃক সুপারিশকৃত যে ব্যাচে যোগদান করেন সেটাই তাঁদের নিয়মিত ব্যাচ এবং পিএসসি কর্তৃক সুপারিশকৃত সম্মিলিত মেধাতালিকাই জ্যেষ্ঠ্তার একমাত্র ভিত্তি। জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো আইন ভঙ্গের শামিল।

সৃষ্ট বৈষম্যের ফলে জ্যেষ্ঠ্যতা হারানো ও পদোন্নতি বঞ্চিত ২৫ ক্যাডারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের (প্রায় ২০০ উপসচিব) বর্তমানে এক দীর্ঘ জটের সৃষ্টি করা হয়েছে। এ জট আরও দীর্ঘ করার জন্য প্রতি বছর ২৫ ক্যাডার হতে উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়। উক্ত আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সরকারের পুলে এসে পিএসসি’র জ্যেষ্ঠ্তার ক্রম হারানো এবং বৈষম্যের শিকার হওয়া অন্যান্য ক্যাডার হতে আগত কর্মকর্তারা প্রবঞ্চনার ফাঁদে পড়েন এবং এভাবে তাদের মেধা ও ক্যারিয়ার ধ্বংস করা হয়।

বছরের পর বছর এভাবেই বিনষ্ট হচ্ছে জনগণের করের অর্থে তিলে তিলে গড়ে তোলা একঝাঁক মেধাবী, জ্যেষ্ঠ ও দেশপ্রেমিক জনশক্তি, যারা প্রকৃতপক্ষে দেশ ও জাতির জন্য লাগসই কৌশল নির্ধারণকারী ও দক্ষ বাস্তবায়নকারী হতে পারতো।

প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত অন্য সকল ক্যাডার হতে মেধাতালিকাভুক্ত সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাগণকে উপসচিব হিসেবে পুলভু্ক্ত করে তাদেরকে পরবর্তী পদে পদোন্নতির জন্য স্বাভাবিক নিয়মে কেন বিবেচনা করা হয় না, কেন আমন্ত্রণ জানিয়ে সরকারের পুলভুক্ত করে তাদেরকে তিলে তিলে ধ্বংস করা হচ্ছে, কেন রাষ্ট্র ও সরকারকে তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে – এর কোন সদুত্তর কি এসএসবি বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে? এই মেধাবী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কী অপরাধ? তারা কেন আক্রোশের শিকার? তারা কেন পরিকল্পিত মেধাহত্যাযজ্ঞের শিকার?

বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক Civil Appeal Nos. ২৯৪-৯৮ of ২০০৩-এ প্রদত্ত রায়ে বলা হয়েছে:

“যখনই কোন কর্মকর্তা ২০০২ সনের বিধিমালা অনুসারে উপসচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হইলেন, তাহা যেকোন ক্যাডার হইতেই হউক না কেন, তিনি তখন একজন পরিপূর্ণ উপসচিব।

তাহার পূর্বের ক্যাডার পরিচয় তখন বিলুপ্ত হইবে। সচিবালয়ের উচ্চতর উপসচিব পদে তখন তিনি অধিষ্ঠান। সেই অধিষ্ঠা (Status) লইয়াই অন্য সকল উপসচিবের সহিত একশ্রেণীভুক্ত হইয়া সম-অধিকার লইয়া তিনি পরবর্তী উচ্চতর যুগ্মসচিব পদে বা পরবর্তীতে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হইবার জন্য বিবেচিত হইবেন।”

অথচ এসএসবি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ আদালতের উপরিল্লিখিত পর্যবেক্ষণও আমলে নিচ্ছে না। এছাড়া নিম্নোক্ত আইন ও বিধি বিধানের প্রতিও অবজ্ঞা করা হচ্ছে;
•গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদ
•সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৮(১) ধারা
•BCS Seniority Rules of 1983 2.(a) উপবিধি
•সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২ এর ৪(১), ৫(২) উপবিধি।

সিনিয়র সার্ভিস পুলে মানবসম্পদের এরূপ অব্যবস্থাপনার কারণে জনপ্রশাসন মেধাশূন্য ও অদক্ষ হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটা রাষ্ট্র।

এমতাবস্থায়, অতি দ্রুত ক্যাডার নির্বিশেষে বৈষম্যহীন মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়ার লক্ষ্যে প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত ২৫ ক্যাডারের বে-আইনীভাবে পদোন্নতি বঞ্চিত ১৩ থেকে ২২ তম ব্যাচের উপসচিবগণকে পিএসসি’র মেধাতালিকা অনুযায়ী স্ব-স্ব ব্যাচের সাথে জ্যেষ্ঠতা নিশ্চিতপূর্বক যুগ্মসচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি প্রদান করার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com