শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
সিপাহী বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে মুলাদীর সোনামদ্দিন বন্দরে বিএনপির আলোচনা সভা মুলাদীর চর বাটামারা জমির দখল পাচ্ছে না খোরশেদা আক্তার ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ২০২৪ এর পুনর্জন্ম : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সাথে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সাক্ষাৎ মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্তি চায় আলি আকবার পরিবারবর্গ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে : উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্ন্তবর্তী সরকারের অন্যতম কাজ শহীদ পরিবারকে সহায়তা ও আহতদের পরিপূর্ন চিকিৎসা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আবারো এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন সালাহ উদ্দীন রাজ্জাক যৌথ অভিযানে ভোলায় অস্ত্রসহ দুই ডাকাত আটক নারীর প্রতি সহিংসতা সামজিক ব্যাধি দুর করতে হবে : উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

প্রতিবন্ধী সন্তানের গলায় রশি বেঁধে টেনে টেনে ভিক্ষা করেন মা

ডেস্ক নিউজ ॥

প্রতিবন্ধী সন্তানের গলায় রশি বেঁধে তা টেনে টেনে ভিক্ষা করেন এক অসহায় মা। বছরের পর বছর এভাবে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এই মা। প্রতিবন্ধী সন্তানের গলায় রশি বাঁধার বিষয়টি অমানবিক হলেও তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি কেউ। সন্তানের গলার রশি টেনে টেনে প্রতিদিন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ভিক্ষার জন্য ছুটে যান তিনি।

তবে ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত এই মা। এ অবস্থায় ছেলের চিকিৎসা করাতে চান তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ছেলের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করে যেতে চান এই মা। এজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার শৈলাডহর গ্রামের প্রতিবন্ধী জাকির হোসেনের মা জামেনা খাতুন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবন্ধী ছেলে জাকিরের গলায় রশি বেঁধে দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভিক্ষা করেন মা জামেনা খাতুন। তাদের বাড়িঘর নেই। অন্যের বাড়িতে বসবাস করেন তারা। প্রতিদিন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে যান বেঁচে থাকার তাগিদে। ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে চলে তাদের সংসার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রবণশক্তিহীন ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয় জাকির হোসেন। জন্মের কিছুদিন পর বাবাকে হারায় জাকির। এরপর জীবিকার তাগিদে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলের গলায় রশি বেঁধে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করেন মা।

জাকিরের মা জামেনা খাতুন বলেন, প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মেছে জাকির। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর চলতে পারছিলাম না আমরা। এজন্য সন্তানের গলায় রশি বেঁধে ভিক্ষা করতে নামি। ভিক্ষা করে যা পাই তা দিয়ে মা-ছেলে খেয়ে বেঁচে আছি। মাঝেমধ্যে রশি ছিঁড়ে ছুটে যায় জাকির। তখন পাগল বলে মানুষে মারধর করে। আমি মরে যাওয়ার পর ছেলের কি হবে তা নিয়ে চিন্তিত। ছেলের চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা চাই আমি।

প্রতিবেশীরা জানায়, জাকিরকে বাড়িতে বেঁধে রেখে গেলে রশি ছিঁড়ে চলে যায়। পথে ঘাটে মানুষে মারধর করে। জাকিরের মা এভাবে রশিতে বেঁধে ভিক্ষা করলে সবার খারাপ লাগে। পশুর মতো ছেলের গলায় রশি বেঁধে নিয়ে যায় মা। আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করি। ঘরবাড়ি নেই। থাকার জায়গা নেই। অন্যের বাড়িতে থাকে মা-ছেলে। আপন বলতে তাদের কেউ নেই। তাদের সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে এলে অসহায় মা-ছেলের একটা ব্যবস্থা হতো।

দুর্গাপুর উপজেলার দক্ষিণ ভবানিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর মাহমুদ বলেন, প্রতিবন্ধী ছেলে ও তার মাকে প্রায়ই দুর্গাপুরে দেখা যায়। বিষয়টা খুবই অমানবিক। প্রতিবন্ধী ছেলের গলায় রশি বেঁধে ঘোরানো খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। অসহায় মা-ছেলের পাশে বিত্তবান এবং সবার দাঁড়ানো উচিত। তাহলে এই অমানবিক ঘটনা থেকে মুক্তি পাবে প্রতিবন্ধী ছেলেটি।

দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মাহমুদা শারমিন নেলী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। খুবই অমানবিক ঘটনা। আমরা সাধ্যমতো অসহায় মা-ছেলের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। যে বয়সে ছেলেটি মায়ের দায়িত্ব নেয়ার কথা সে বয়সে মাকেই ছেলের দায়িত্ব বহন করতে হচ্ছে। সবাই এগিয়ে এলে দুর্দশা কেটে যাবে তাদের।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম বলেন, জাকির হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হয়। আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য কিছুটা সাহায্য করেছি। আমরা জাকির ও তার মাকে সরকারি সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2017 ithostseba.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com
Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com